বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার পতন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার লেনদেন বেড়ে ৮শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে। অপরদিকে চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এদিন লেনদেন বেড়ে ৪৩ কোটি টাকার ঘরে ওঠে এসেছে। এসময় দুই স্টকে শেয়ার বিক্রয়ের চাপে লেনদেন বাড়ে। তবে এদিন দুই স্টকের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়। এদিন ডিএসইর ৬৭ ভাগ এবং সিএসইর ৬৫ ভাগ কোম্পানির দর কমেছে। উভয় স্টকে সব ধরনের সূচক পতন হয়। ;

বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজার উত্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি আগারগাওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন,পুঁজিবাজার ভালো হবে। শিবলী রুবাইয়াতের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেই উত্থান ফের মন্দায় চলে আসে।;

এদিকে আসন্ন অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট পেশের পর দুই কার্যদিবস পুঁজিবাজার দরপতন হয়। এই দুই কার্যদিবসে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। ফলে অনেক কোম্পানিতে শেয়ার ক্রেতা খুজে পাওয়া যায় না। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট করহার ছাড় দেয়া হলেও পুঁজিবাজারে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ডিএসইতে এদিন দুই খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। শতভাগ দর হ্রাসের খাতগুলো হলো- সেবা আবাসন এবং টেলিকম। এদিন সিমেন্ট, সিরামিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, নন ব্যাংকিং আর্থিক, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানী শক্তি, বিমা, আইটি, পাট, বিবিধ, ফান্ড, পেপার, ওষুধ রসায়ন এবং চামড়া ;খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এদিন বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমার একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।

পুঁজিবাজারে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়। এর মধ্যে ডিএসইর ৬৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং সিএসইর ৬৫ দশমিক ২৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়। অপরদিকে, ডিএসইর ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং সিএসইর ২৩ দশমিক ৭১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এই ধরনের হ্রাসকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইতে গতকাল সোমবার লেনদেন হয়েছে ৭৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার। গত রবিবার লেনদেন হয়েছিল ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ২৫৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪২টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৯১ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৮ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৯৪ দশমিক ৮২ পয়েন্টে।

সিএসইতে এদিন লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত রবিবার লেনদেন হয়েছিল ২০ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ১৯০টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩২টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১০১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭৮৯ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে।

এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৯ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৬১ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৬২ দশমিক ১০ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৫ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৭৯ ;দশমিক ৪০ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৫৫৫ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে, ১১ হাজার ২৬৭ দশমিক ২০ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৯০ দশমিক ১৮ পয়েন্টে।

মন্তব্য করুন






আর্কাইভ